প্রকাশিত: ৩০/০৮/২০১৮ ১০:৫২ এএম
ডিসপেনসারীর রাস্তা দখল-দূষণে পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতির সম্মুখীন

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া ::

ডিসপেনসারীর রাস্তা দখল-দূষণে পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতির সম্মুখীন

উখিয়া থানা ডিসপেনসারীর প্রবেশ মুখে সিএনজির পার্কিং, অবৈধ দখল ও দোকানদারদের ময়লা আবর্জনার দুর্গদ্ধে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। স্থানীয় গরিব অসহায় রোগীরা ডাক্তারের কাছে সেবা নিতে এসে বিড়ম্বনায় পড়ছেন। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ডিসপেনসারীর পেছনের পাহাড়ে মাদক সেবী ও বখাটেদের আড্ডা জমে। মাঝে মধ্যে পুলিশ হানা দিয়ে মাদক সেবীদের ধরার চেষ্টা করলে বিশাল পাহাড়ের নিচ দিয়ে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ডিসপেনসারী এলাকায় বাউন্ডারী দেয়াল না থাকায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। উখিয়া সদরের প্রাচীনতম রোলার ডিসপেনসারী (আর ডি) এর প্রবেশ মুখে যত্রতত্র সিএনজিতে যাত্রী উঠা-নামা এবং উভয় পাশে অবৈধ দখলদারদের চা ও খাবার দোকান বসায় রোগীর যাতায়াতে মারাত্নক অসুবিধা হচ্ছে। রাতে পাহাড়ে ডিসপেনসারীর অভ্যন্তরে মল মূত্র ত্যাগ ও দোকানদাররা বর্জ্য ফেলায় দিনের বেলায় দুর্গন্ধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যাতায়াত করতে হয়।গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডিসপেনসারীর ভবনটি মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ অবস্থায় আছে। ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন এই ভবনটিতে বৃষ্টির পানি ঢুকে মেঝেতে পানি জমে আছে। ভবনটি টিনের চাল দরজা জানালা জরাঝীর্ণ অবস্থা। হাসপাতালের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন। ডিসপেনসারীটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত। এখানে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা মাটি হওয়ায় রোগীদের যাতায়াত কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠাকাল সময় হতে সীমানা প্রাচীরের অভাবে সরকারি জমি দিন দিন বেদখল হয়ে আসছে।এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানা ডিসপেনসারীর উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, আমি লিখিতভাবে চট্রগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার সিভিল সার্জন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার ভূমি ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও প,প কর্মকর্তা বরাবরে পত্র প্রেরণের মাধ্যমে জানিয়েছি। এখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। ফাতেমা তার বয়োবৃদ্ধ মাকে নিয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে এসে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, হাসপাতালের একমাত্র রাস্তাটি বৃষ্টিতে ভিজে কাদাঁমাটা অবস্থায় মাকে নিয়ে উঠতে খুবই কষ্ট হয়েছে। উখিয়া সদরে অবস্থিত এই হাসপাতাল সড়কটি অবশ্যই কার্পেটিং হওয়া দরকার। রোগীর স্বজন আমানত উল্লাহ জানান, বৃষ্টি না হলে হাসপাতালের প্রবেশ মুখের রাস্তায় দোকানদাররা চেয়ার টেবিল বসিয়ে চা বিক্রি করেন। সেখানে বখাটেরা চা থেতে খেতে রোগীর সাথে আসা মেয়েদেরকে টিটকারী মারে। তিনি হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আমেনা খাতুন বলেন, বর্তমান ডাক্তার মাহমুদুল হাসান আমাদের অত্যন্ত যত্নসহকারে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এখানকার ডাক্তার নার্সরা খুবই আন্তরিক। শুধুমাত্র পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতার অভাবে রোগীরা এখানে আসতে চান না। হাসপাতালের আশপাশে যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ, মানববর্জ্যের দুর্গন্ধে মুখে রোমাল দিয়ে যাতায়াত করতে হয় আমাদের। পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, অপরিকল্পিতভাবে হচ্ছে সবকিছু। একজন নাগরিক হিসাবে আমাদের যে দায়িত্ববোধ থাকা দরকার তা আমাদের নেই। ফলে সর্বক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা। প্রাচীনতম এই ডিসপেনসারীতে ফুলের বাগান থাকা দরকার। রোগীরা এখানে এসে স্বাচ্ছন্দবোধ করতো। চতুর্দিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ের উপর এই হাসপাতালটিকে আরও আকর্ষণীয় করার জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

পাঠকের মতামত